সিরাজগঞ্জে চাঞ্চল্যকর বান্ধুবী নাসরিন হত্যার রহস্য উদঘাটন হলেও মূল আসামী গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি পুলিশ। এ হত্যাকান্ড নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৬ অক্টোবর রাতে সদর উপজেলার সয়দাবাদ পূর্নবাসনের বন্ধুর বাবা পটলের ফাঁকা বাড়িতে বান্ধুবী নাসরিনকে নিয়ে যায় রোমান এবং সঙ্গে ছিল তার আরো ৩/৪জন বন্ধু।
রাতভর সেখানেই চলে ইয়াবার আড্ডা। এ আড্ডায় নাকি নারসিনকে হত্যা করে ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়। অবিশ্বাস হলেও পরদিন ভোরে ২ বন্ধু মটরসাইকেলের মাঝখানে মৃত নাসরিনকে বসিয়ে নিয়ে যায় সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে। মর্গের সামনে লাশ ফেলে রেখে রোমান তার বান্ধুবীর বাবাকে মৃত্যুর সংবাদ জানায় মোবাইলে। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ওই হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে এবং তাদের বন্ধু আশ্রয়দাতা আকাশকে গ্রেফতার করে। নিহত নাসরিন (১৯) সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার মাছুমপুর মধ্যপশ্চিমপাড়ার মহল্লার শ্রমিক নাসির উদ্দিনের মেয়ে।
স্বামীর সংসার ভেঙ্গে যাওয়ায় ৩ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে নাসরিন ২ বছর ধরে বাবার বাড়িতেই থাকতো। এ অবস্থায় ওই পূর্নবাসনের বাসিন্দা রোমান (২৫) ও নোমানের (২৪) সাথে তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। রোমান মাঝে মধ্যেই নাসরিনকে তাদের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যেত। এ অবস্থায় ওনদিন বিকেলে নিজের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নাসরিনকে নিয়ে যায় রোমান। ওইদিন গভীর রাতে রোমান তার বান্ধুবীর বাবাকে জানায় নাসরিন পাগলামি করছে এসে আপনি নিয়ে যান এবং সকালে যাওয়ার কথা বলে ফোন রেখে দেয় নাসরিনের বাবা।
নিহতের বাবা নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, উভয়ের মধ্যে সর্ম্পক থাকায় মেয়েকে রোমানের সাথে যেতে দিয়েছিলাম। নিজের বাড়িতে না নিয়ে ওই ফাঁকা বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে যায় রোমান। সেখানে রাতভর তার অন্যান্য ছেলে বন্ধুদের নিয়ে ইয়াবা সেবনের আড্ডায় মেতে ছিল। এক পর্যায়ে তারা সবাই মিলে মেয়েকে মারধর করে হত্যার পর লাশ ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছিল।
তারা হয়তো মেয়েকে দলবেঁধে ধর্ষনও করেছে। এ হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবী করেছেন তিনি। এ বিষয়ে থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় আশ্রয়দাতা আকাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার আগে গভীর রাতে মটরসাইকেলে করে নাসরিনকে নিয়ে ওই বাড়িতে হাজির হয় রোমান। সাথে আরো ৩/৪জন বন্ধু ছিল।
ঘরের মধ্যে তারা সবাই এক সাথে ইয়াবা সেবন করে। একপর্যায়ে নাসরিনকে নিয়ে রোমান আলাদা একটি কক্ষে ঢুকে পড়ে। অন্যরা ঘরের মধ্যেই ইয়াবা সেবন করতে থাকে। ভোরের দিকে আকাশসহ অন্যরা রোমানের কক্ষের ভিতর নাসরিনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে। অভিযুক্তরা এলাকায় ছিচকে চোর ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। এ ব্যাপারে ৫জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেছেন তার বাবা। এ মামলায় জড়িতদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান চলছে এবং ২/৪ দিনের মধ্যে তাদের গ্রেফতার সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন।
